ওয়াগনারের বিদ্রোহের পরিকল্পনা আগে থেকেই জানত আমেরিকা

ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠী রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে যাচ্ছে- একথা আগেই জানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিনের এই পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে পেরে প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রাগার নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন মার্কিন কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এই খবর সামনে এনেছে বলে রবিবার জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন বিদ্রোহের মতো কোনও একটা পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে গত বুধবারই মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সতর্ক করা হয়েছিল।

আর এই খবর শোনার পর মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের তাৎক্ষণিক উদ্বেগ ছিল, প্রিগোজিনের এই পদক্ষেপ মস্কোর পারমাণবিক অস্ত্রাগারের নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করবে কি না।

মার্কিন গোয়েন্দারা গত কয়েক মাস ধরে ওয়াগনার প্রধান এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুসহ সামরিক নেতাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা পর্যবেক্ষণ করছিল বলেও জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার রোস্তোভ প্রদেশে প্রবেশ করে ওয়াগনার সেনারা। পুরো বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন প্রিগোজিন নিজে। প্রথমে তারা রোস্তোভের সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর দখল করে নেয়। এরপর মস্কোর দিকে যাত্রা শুরু করে।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে রুশ বাহিনী যে বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছেন সেটি রোস্তোভের এই সদর দপ্তর থেকেই পরিচালনা করা হতো।

রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানান, ওয়াগনার বাহিনীর বহরটি প্রথমে রোস্তোভ থেকে ভোরোনেজে আসে। এরপর সেখান থেকে মস্কোর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। আর ঠিক তখনই হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোঁড়া হয়। ওই বহরটিতে সাঁজোয়া যান এবং অন্তত একটি ট্যাংক ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এই শহরটি মস্কো থেকে প্রায় ৫৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

এদিকে ওয়াগনার সেনারা যেন কোনওভাবেই মস্কোতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সেখানে আগেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। মস্কোর বিখ্যাত রেড স্কয়ারে লোহার ব্যারিকেডও দেওয়া হয়।

পরে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের ওই লড়াই অনেকটা নাটকীয়ভাবেই থেমে যায়। মূলত ক্রেমলিনের সামরিক নেতৃত্বকে ক্ষমতাচ্যুত করার হুমকি দিয়ে রাজধানী মস্কো অভিমুখে যাত্রা করার ঘোষণা দেওয়া হলেও পরে তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

রাজধানী মস্কোসহ রাশিয়ার পরিস্থিতি এখন অনেকটা শান্ত এবং সেখানে ইতোপূর্বে জারি করা নানা বিধিনিষেধও তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বহু সংবাদমাধ্যম। তবে এরপরও যুক্তরাষ্ট্রসহ দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার পরিস্থিতির দিকে ঘনিষ্ঠভাবে নজর রাখছে। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //